কলাপাড়া (পটুয়াখালী)প্রতিনিধিঃ
বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন এক মেয়ে সহ দুই সন্তান ও স্ত্রীকে রেখে নতুন সংসার গড়তে ভায়রাজ্বিকে নিয়ে বাড়ি ছেড়েছে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার ইউনুস সরদার (৩১)।
উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের খাজুরা গ্রামের বাসিন্দা ইউনুস সরদার।
চর-চাপলী এলাকার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম সরদারের ছেলে।
বর্তমানে সাদিয়া (৯) সে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ও ৩ মাসের আরো একটি কন্যা সন্তান রেখে যাওয়ায় বিপাকে তার স্ত্রী রাবেয়া বেগম।
জানা যায়, ওই এলাকার পাশাপাশি বসবাস করে আসছে ইউনুস ও ওই মেয়ের পরিবার।
দীর্ঘদিন একইস্থানে থাকায় তাঁদের মধ্যে খালু-ভায়রাজ্বি সম্পর্ক হলেও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে টিকটকে তাঁদের নিয়মিত যোগাযোগ হতো।
যা নিয়ে দুই পরিবারের মাঝে অনেকসময় কথা কাটাকাটিও হতো।
এদিকে দুই সন্তান ও স্ত্রীকে ফেলে যাওয়ায় তাঁদের কাটছে দূর্বিষহ জীবন। ইউনুস পেশায় জেলে, তাই একদিন রোজগার বন্ধ থাকলে না খেয়ে থাকতে হতো পরিবারের। সে চলে যাওয়ায় দুই সন্তান নিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে তার স্ত্রী রাবেয়া আক্তার। একদিকে দুই সন্তানের ক্ষুধার যন্ত্রণা, সামাজিক বঞ্চনা এবং ঋণে ঝরঝরিত পরিবারটি পাওনাদারদের চাপে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে তাঁরা।
ইউনুস সরদারের স্ত্রী রাবেয়া আক্তার জানান, আমার এক মেয়ে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন আর এক মেয়ের বয়স তিন মাস মাত্র। এনজিও থেকে ২ লক্ষ টাকা ঋণ নেয়া। এনজিওর লোকেরা প্রতিদিন আসে টাকার জন্য, আমার সন্তানদের খাবারের ঘরে পানি ছাড়া কিছুই নেই। আমার ছোট ভাই দিনমজুরি কাজ করে গত এক মাস যাবত ভাই আমার কাছে থাকে তার ইনকামের টাকায় আমরা খাই। মাঝে মাঝে না খেয়ে থাকে আশেপাশের লোকজন কিছু খাবার দেয়। আপনারা একটু তাকে খুঁজে বের করে আমার পরিবারটাকে বাঁচান না হয় আমার আত্মহত্যা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবেনা।
স্থানীয় মো. সবুজ জানান, এই পরিবারের একমাত্র আয়ের ব্যক্তি ছিল এই ইউনুস। সে এইভাবে তার ভায়রাজিকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার কারণে আর্থিক সংকটে একেবারে খারাপ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে অন্যদিকে সামাজিকভাবে একটি ঘৃণার কাজ করেছে যে কারনে মানুষ নানা কথা বলছে। আমাদের অনুরোধ দেশের যে প্রান্তে হোক ওদেরকে দেখলে দরিয়ে দিবেন।
পালিয়ে যাওয়া ওই শিক্ষার্থীর মা জানান, আমার মেয়ে দাদাবাড়ি যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়েছে পরে ওর দাদা বাড়িতে না পৌছালে আমরা খোঁজাখুজি করি পরে জানতে পারি আমার বোনের স্বামীর সাথে পালিয়েছে। এর পরে আমরা থানায় জানিয়েছি। থানা থেকে পুলিশ এসে উভয় পরিবারের সাথে কথা বলে গেছে।
পরিদর্শনে যাওয়া মহিপুর থানার এএসআই সাধন কুমার পাল জানান, আমাদের কাছে মৌখিকভাবে তারা জানিয়ে যে খালু ভায়রাজ্বি নিয়ে পালিয়েছে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় পরিবার ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে আসছি। তবে তারা মামলা কিংবা অভিযোগ করতে রাজি নয়, নিজেরা খোঁজাখুজি করছে।
মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন তালুকদার জানান, বিষয়টি আমি অবগত নই, জানান চেষ্টা করছি। তবে লিখিত অভিযোগ দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।